১৬ মার্চ ২০২৫, রবিবার, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হেমন্ত রাজ্যে মুসলিম সাংসদ রাকিবুল হুসেনের ওপর প্রাণঘাতী হামলা

Juifa Parveen
  • আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, শুক্রবার
  • / 0

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: উত্তর ভারতের আদলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটানোর দৃশ্য এবার বিজেপি শাসিত অসমেও। সে রাজ্যে দিনদুপুরে বিরোধী দলের এক সাংসদের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালালো দুÜৃñতীরা। সাংসদের দেহরক্ষীর উপরও হামলা চালায় আক্রমণকারী ধারাল অস্ত্র ও ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে সাংসদের উপর উপর্যুপরি আক্রমণ করে ২০-২৫ জনের দুষ্কৃতী দল। দুষ্কৃতীদের মুখ কালো কাপড়ে বাঁধা ছিল। কারো মুখে কালো মাস্ক ছিল।

বৃহস্পতিবার নজিরবিহীন বর্বরোচিত ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে রাজ্যের নগাঁও জেলার রূপহীহাট থানা এলাকায়। আক্রান্ত সাংসদের নাম রকিবুল হোসেন। তিনি নিম্ন অসমের ধুবড়ি আসনের কংগ্রেস সাংসদ। হামলার ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ ভাইরাল হতেই অসমজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে রূপহীহাট থানা ঘেরাও করে কংগ্রেস কর্মীরা। ঘটনায় এখনও অবধি পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। পুলিশের ডিজি হরমিত সিং বলছেন, তদন্ত শুরু হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ। নগাঁও জেলার সামাগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের গুণাবাড়িতে একটি দলীয় কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন সাংসদ রকিবুল। তিনি সামাগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের ৫ বারের বিধায়ক ছিলেন। কংগ্রেস আমলে তিনবার মন্ত্রীও হয়েছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে বিধায়কের পদ ছেড়ে দিয়ে ধুবড়ি কেন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন।

হামলা প্রসঙ্গে সাংসদ রকিবুল বলেন, বৃহস্পতিবার দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে তাঁর উপর হামলা হতে পারে বলে গোপন সূত্রে খবর আসে। তখন বিষয়টি নগাঁও পুলিশ সুপারকে টেলিফোনে তিনি জানান। পুলিশ সুপার তাঁকে আশ্বাস দেন, পুলিশের দলবল নিয়ে রূপহীহাট থানার ওসি নতুন বাজার তিনি মাথা মোড়ে থাকবেন। সেখান থেকে নিরাপত্তা দিয়ে তাঁকে সভাস্থলে নিয়ে যাওয়া হবে। পুলিশ সুপারের আশ্বাস পেয়ে নিজের গাড়িতে তিনি নতুন বাজারে আসেন। কিন্তু দেখা যায় ওসি বা কোনও পুলিশ সেখানে নেই। ওদিকে ফোন করলে তিনি জানান কিছুটা দূরে কলেজের সামনে আছেন। তখন গাড়ি করে সভাস্থলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বদল করেন সাংসদ। কারণ দুই মাস আগে সামাগুড়ি উপনির্বাচনের প্রচারের সময় রকিবুল হোসেন ও কংগ্রেসের একাধিক বিধায়কের গাড়িতে আক্রমণ ও ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা। সেই কথা ভেবে গাড়িতে করে না গিয়ে বাইকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে দুষ্কৃতীরা যে প্রাণঘাতী হামলা চালাবে তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। সাংসদ একটি বাইকে উঠতেই তাঁর উপর হামলা শুরু হয়। একজন ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে মাথায় মারে, কিন্তু হেলমেট থাকায় রক্ষা পান। তবে পিঠে ও ঘাড়ে ব্যাটের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ওইসময় তাঁর দেহরক্ষী শূন্যে গুলি চালায়। তার উপরও হামলা হয়।

এই ঘটনার সময় বিধানসভা অধিবেশন চলছিল। হামলার খবর বিধানসভায় পৌঁছলে কংগ্রেস সাংসদরা মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য দাবি করেন। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ওটা আমাদের এলাকা নয়, রকিবুল হোসেনের জায়গা। যদিও এই হামলায় মুখ্যমন্ত্রীর উৎসাহ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস।

রিপোর্টার

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হেমন্ত রাজ্যে মুসলিম সাংসদ রাকিবুল হুসেনের ওপর প্রাণঘাতী হামলা

আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: উত্তর ভারতের আদলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটানোর দৃশ্য এবার বিজেপি শাসিত অসমেও। সে রাজ্যে দিনদুপুরে বিরোধী দলের এক সাংসদের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালালো দুÜৃñতীরা। সাংসদের দেহরক্ষীর উপরও হামলা চালায় আক্রমণকারী ধারাল অস্ত্র ও ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে সাংসদের উপর উপর্যুপরি আক্রমণ করে ২০-২৫ জনের দুষ্কৃতী দল। দুষ্কৃতীদের মুখ কালো কাপড়ে বাঁধা ছিল। কারো মুখে কালো মাস্ক ছিল।

বৃহস্পতিবার নজিরবিহীন বর্বরোচিত ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে রাজ্যের নগাঁও জেলার রূপহীহাট থানা এলাকায়। আক্রান্ত সাংসদের নাম রকিবুল হোসেন। তিনি নিম্ন অসমের ধুবড়ি আসনের কংগ্রেস সাংসদ। হামলার ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ ভাইরাল হতেই অসমজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে রূপহীহাট থানা ঘেরাও করে কংগ্রেস কর্মীরা। ঘটনায় এখনও অবধি পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। পুলিশের ডিজি হরমিত সিং বলছেন, তদন্ত শুরু হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ। নগাঁও জেলার সামাগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের গুণাবাড়িতে একটি দলীয় কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন সাংসদ রকিবুল। তিনি সামাগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের ৫ বারের বিধায়ক ছিলেন। কংগ্রেস আমলে তিনবার মন্ত্রীও হয়েছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে বিধায়কের পদ ছেড়ে দিয়ে ধুবড়ি কেন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন।

হামলা প্রসঙ্গে সাংসদ রকিবুল বলেন, বৃহস্পতিবার দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে তাঁর উপর হামলা হতে পারে বলে গোপন সূত্রে খবর আসে। তখন বিষয়টি নগাঁও পুলিশ সুপারকে টেলিফোনে তিনি জানান। পুলিশ সুপার তাঁকে আশ্বাস দেন, পুলিশের দলবল নিয়ে রূপহীহাট থানার ওসি নতুন বাজার তিনি মাথা মোড়ে থাকবেন। সেখান থেকে নিরাপত্তা দিয়ে তাঁকে সভাস্থলে নিয়ে যাওয়া হবে। পুলিশ সুপারের আশ্বাস পেয়ে নিজের গাড়িতে তিনি নতুন বাজারে আসেন। কিন্তু দেখা যায় ওসি বা কোনও পুলিশ সেখানে নেই। ওদিকে ফোন করলে তিনি জানান কিছুটা দূরে কলেজের সামনে আছেন। তখন গাড়ি করে সভাস্থলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বদল করেন সাংসদ। কারণ দুই মাস আগে সামাগুড়ি উপনির্বাচনের প্রচারের সময় রকিবুল হোসেন ও কংগ্রেসের একাধিক বিধায়কের গাড়িতে আক্রমণ ও ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা। সেই কথা ভেবে গাড়িতে করে না গিয়ে বাইকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে দুষ্কৃতীরা যে প্রাণঘাতী হামলা চালাবে তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। সাংসদ একটি বাইকে উঠতেই তাঁর উপর হামলা শুরু হয়। একজন ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে মাথায় মারে, কিন্তু হেলমেট থাকায় রক্ষা পান। তবে পিঠে ও ঘাড়ে ব্যাটের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ওইসময় তাঁর দেহরক্ষী শূন্যে গুলি চালায়। তার উপরও হামলা হয়।

এই ঘটনার সময় বিধানসভা অধিবেশন চলছিল। হামলার খবর বিধানসভায় পৌঁছলে কংগ্রেস সাংসদরা মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য দাবি করেন। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ওটা আমাদের এলাকা নয়, রকিবুল হোসেনের জায়গা। যদিও এই হামলায় মুখ্যমন্ত্রীর উৎসাহ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস।