আগাছায় ভরে গেছে হাজারদুয়ারি, বিষধর সাপের ভয়ে আতঙ্কিত মানুষ

- আপডেট : ১৯ জুন ২০২১, শনিবার
- / 0

আবদুল ওদুদ
বাংলা, বিহার– উড়িষ্যা (ওড়িশা)-র শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার হাজারদুয়ারি এখন অনেকটাই অবহেলা-অনাদরে পড়ে রয়েছে। ঐতিহাসিক হাজারদুয়ারির আশপাশ ভরে গেছে আগাছায়। বেড়েছে সাপের উপদ্রব। ফলে আতঙ্কে হাজারদুয়ারি কিংবা ইমামবাড়ার দিকে পা বাড়াচ্ছেন না অনেকেই। আগে রাত-বিরেতে সাপ দেখা গেলেও এখন দিনে-দুপুরে চন্দ্রবোড়া, গহম, খরিশ জাতের বিষধর সাপের উপদ্রব বেড়েছে এমনই অভিযোগ আসছে। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা হাজারদুয়ারি এখন বিষধর সাপের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারির বাস্তবচিত্র এখন এমনটাই। আর এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে পুরোপুরি দায়ী করছেন লালবাগ টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ধর। তিনি বলেন, হাজারদুয়ারি দেখাশোনার জন্য তিনটি বিভাগ রয়েছে। একটি গার্ডেন বা হর্টিকালচার, দ্বিতীয় মিউজিয়াম এবং তৃতীয়টি সার্কেল। সার্কেল বিভাগের কাজ বিল্ডিং রক্ষণাবেক্ষণ। মিউজিয়ামের কাজ সাজিয়ে তোলা। ঐতিহাসিক জিনিসগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণ করা। আর গার্ডেন বিভাগের কাজ, নতুন গাছ লাগানো, আগাছা পরিষ্কার করা।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে হাজারদুয়ারি আশ এবং ফাঁকা মাঠ পুরোপুরি আগাছায় ভর্তি হয়ে গেছে। তিনি বলেন, গত ১৫ মাস ধরে আগাছায় ভরে যাওয়ায় সাপের উপদ্রব বেড়েছে।
ইন্দ্রজিৎবাবুর অভিযোগ, গার্ডেন বিভাগ অর্থাৎ হর্টিকালচার বিভাগের অফিস বাংলায় নয়, ওড়িশায়। ডেপুটি সুপারিন্টেনডেন্টের অফিস ওড়িশায় হওয়ায় কেউ এখন আসেন না। লকডাউনে এক বছরের বেশি সময় ধরে কারও দেখা মেলেনি। ফলে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করাও সম্ভব হচ্ছে না। আগাছা পরিষ্কার করার দাবি জানিয়ে ডেপুটেশন দেওয়ার লোক খুঁজে পাওয়া যায় না। তালাবন্দি হাজারদুয়ারি এখন সাপের আড্ডা।
ইন্দ্রজিৎবাবুর আরও অভিযোগ, গার্ডেন সংক্রান্ত টেন্ডার সমস্যা শুরু হয় ২০০৩ সালের দিক থেকে। কিন্তু ২০০৫-০৬ সালের দিকে গার্ডেন কর্মীরা হাইকোর্টে গেলে। হাইকোর্ট সেই মামলা বাতিল করে দেয়। টেন্ডার পাওয়া কন্ট্রাক্টর ইচ্ছেমতো কর্মী দিয়ে কাজ করাত। মাস্টার রোলে কাজ করার সেই সময়ে অনেকটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ছিল হাজারদুয়ারি চত্বর। বর্তমানে গার্ডেন বিভাগের টেন্ডার রয়েছে দিল্লির একটি সংস্থার কাছে। কিন্তু নতুন কোন টেন্ডার না হওয়ায় অবহেলায় পড়ে রয়েছে হাজারদুয়ারি চত্বর।
তৃণমূল কংগ্রেসের টাউন সভাপতির আরও অভিযোগ, বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার যে নিয়মে টেন্ডার করছে– তাতে কন্ট্রাক্টরা কোনও লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে না। ফলে কেউ টেন্ডার জমা করতেও আগ্রহী নয়। এখন টেন্ডার একর প্রতি কিংবা স্কোয়ার হিসাবে করতে হবে। এ ছাড়াও নাইট গার্ড, জল দেওয়া থেকে নানা বিষয় রয়েছে। এর পরেও কর্মীদের ইএসআই– পিএফ নানান সমস্যা রয়েছে। যার কারণে কন্ট্রাক্টরেরা হাজারদুয়ারির কাজ নিতে আগ্রহী নয়। হাজারদুয়ারি নিউ প্যালেসের দায়িত্ব প্রাপ্ত সুপারটেনডেন্ট গৌতম হালদারকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোনও কথা বলতে চাননি।