১৯ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হেট স্পিচ: বিজেপি নেতা পিসি জর্জের আগাম জামিন নাকচ

Kibria Ansary
  • আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, শুক্রবার
  • / 4

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘সব মুসলিমই সন্ত্রাসী’! মুসলিমদের কটাক্ষ করে ঘৃণ্যভাষণের জের!  খারিজ হয়ে গেল কেরলের বিজেপি নেতা পিসি জর্জের আগাম জামিনের আবেদন। কেরল হাইকোর্টে বিচারপতি পিভি কুনহিকৃষ্ণন জর্জের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। জানা গেছে, গত ৫ জানুয়ারি একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রেখেছিলেন তিনি। যা সমাজ তথা দেশের জন্য হানিকারক বলেই অভিযোগ এনেছেন বিশেষজ্ঞ মহল।

বলা বাহুল্য, অতীতে একাধিকবার মুসলিমদের টার্গেট করে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন বিজেপি নেতা। শুধু তাই নয়, নিজের ঘৃণ্যভাষণের মাধ্যমে মুসলিমদের হেয় প্রতিপন্ন করার এবং তাঁদের জোরপূর্বক জঙ্গী প্রমাণ করার অক্লান্ত চেষ্টা করেছেন তিনি।

এদিনের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি পিভি কুনহিকৃষ্ণন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোকপাত করে জানিয়েছেন, ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এহেন বক্তব্য আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের যে মর্যাদা রয়েছে তা খর্ব করছে। আর ভারতের মতো দেশে রাজনীতিবিদদের এই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য। তাই ঘৃণাত্মক বক্তব্যে জড়িত সমস্ত অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য ফৌজদারি আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, মুসলিম যুব লীগ পৌর কমিটির অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ২০২৩ (বিএনএস) এর ধারা ১৯৬(১)(ক) (ধর্মীয়, বর্ণগত বা ভাষাগত ভিত্তিতে শত্রুতা প্রচার) এবং ২৯৯ (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য বিদ্বেষপূর্ণ কাজ) এবং কেরল পুলিশ আইনের ধারা ১২০(ও) (বেআইনি সমাবেশ মোকাবেলা করার ক্ষমতা) এর অধীনে তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। এর আগে কোট্টায়াম দায়রা আদালত জর্জের আগাম জামিন নাকচ করে দেয়। তারপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। এদিন হাইকোর্টও তাঁর আগাম জামিন নাকচ করে দেন।

মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারপতি আরও জানান, অতীতে বহুবার ঘৃণামূলক বক্তব্য রেখেছে জজ। এমনকি পূর্ববর্তী জামিনের জন্য জর্জের ওপর যে শর্তারোপ করা হয়েছিল সেটাও বারবার লঙ্ঘন করেছেন তিনি। যদিও জর্জের প্রতিনিধিত্বকারী সিনিয়র আইনজীবী পি বিজয়ভানু জানান, আবেগের বশবর্তী হয়ে উনি এহেন মন্তব্য করেছিলেন। কোনও বিশেষ সম্প্রদায়কে আঘাত করার অভিপ্রায় তাঁর ছিল না। এমনকি উক্ত ভাষণের পর সবার কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। অভিযোগকারী মুহাম্মদ শিহাবের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবী এস রাজীব জর্জের আগাম জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন। তারা যুক্তি দেন যে জর্জকে আগাম জামিনের সুবিধা দেওয়া উচিত নয় কারণ তিনি বারবার উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন। যদিও আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রিপোর্টার

Kibria Ansary

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

হেট স্পিচ: বিজেপি নেতা পিসি জর্জের আগাম জামিন নাকচ

আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, শুক্রবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ‘সব মুসলিমই সন্ত্রাসী’! মুসলিমদের কটাক্ষ করে ঘৃণ্যভাষণের জের!  খারিজ হয়ে গেল কেরলের বিজেপি নেতা পিসি জর্জের আগাম জামিনের আবেদন। কেরল হাইকোর্টে বিচারপতি পিভি কুনহিকৃষ্ণন জর্জের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। জানা গেছে, গত ৫ জানুয়ারি একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রেখেছিলেন তিনি। যা সমাজ তথা দেশের জন্য হানিকারক বলেই অভিযোগ এনেছেন বিশেষজ্ঞ মহল।

বলা বাহুল্য, অতীতে একাধিকবার মুসলিমদের টার্গেট করে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন বিজেপি নেতা। শুধু তাই নয়, নিজের ঘৃণ্যভাষণের মাধ্যমে মুসলিমদের হেয় প্রতিপন্ন করার এবং তাঁদের জোরপূর্বক জঙ্গী প্রমাণ করার অক্লান্ত চেষ্টা করেছেন তিনি।

এদিনের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি পিভি কুনহিকৃষ্ণন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোকপাত করে জানিয়েছেন, ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এহেন বক্তব্য আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের যে মর্যাদা রয়েছে তা খর্ব করছে। আর ভারতের মতো দেশে রাজনীতিবিদদের এই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য। তাই ঘৃণাত্মক বক্তব্যে জড়িত সমস্ত অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য ফৌজদারি আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, মুসলিম যুব লীগ পৌর কমিটির অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ২০২৩ (বিএনএস) এর ধারা ১৯৬(১)(ক) (ধর্মীয়, বর্ণগত বা ভাষাগত ভিত্তিতে শত্রুতা প্রচার) এবং ২৯৯ (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য বিদ্বেষপূর্ণ কাজ) এবং কেরল পুলিশ আইনের ধারা ১২০(ও) (বেআইনি সমাবেশ মোকাবেলা করার ক্ষমতা) এর অধীনে তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। এর আগে কোট্টায়াম দায়রা আদালত জর্জের আগাম জামিন নাকচ করে দেয়। তারপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। এদিন হাইকোর্টও তাঁর আগাম জামিন নাকচ করে দেন।

মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারপতি আরও জানান, অতীতে বহুবার ঘৃণামূলক বক্তব্য রেখেছে জজ। এমনকি পূর্ববর্তী জামিনের জন্য জর্জের ওপর যে শর্তারোপ করা হয়েছিল সেটাও বারবার লঙ্ঘন করেছেন তিনি। যদিও জর্জের প্রতিনিধিত্বকারী সিনিয়র আইনজীবী পি বিজয়ভানু জানান, আবেগের বশবর্তী হয়ে উনি এহেন মন্তব্য করেছিলেন। কোনও বিশেষ সম্প্রদায়কে আঘাত করার অভিপ্রায় তাঁর ছিল না। এমনকি উক্ত ভাষণের পর সবার কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। অভিযোগকারী মুহাম্মদ শিহাবের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবী এস রাজীব জর্জের আগাম জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন। তারা যুক্তি দেন যে জর্জকে আগাম জামিনের সুবিধা দেওয়া উচিত নয় কারণ তিনি বারবার উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন। যদিও আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।