১৬ মার্চ ২০২৫, রবিবার, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অচলাবস্থা কাটিয়ে সচল গণপরিবহণ , যাত্রী পারাপারে চলল ফেরি, বিপাকে বেসরকারি বাস পরিষেবা

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১ জুলাই ২০২১, বৃহস্পতিবার
  • / 0

ইনামুল হক, বসিরহাটঃ অবশেষে কিছুটা হলেও স্বস্তির হাওয়া যাত্রী সাধারণের মধ্যে। রাজ্যের অন্যান্য এলাকার সঙ্গে  পরিবহন পরিষেবা চালু হল সুন্দরবন এলাকাতেও। দীর্ঘ দুই মাসের কার্যত লকডাউনে রাস্তায় চলেনি বাস। বন্ধ ছিল ফেরি চলাচলও। মুখ‍্মন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী ১ জুলাই রাস্তায় ফের গড়াল বাসের চাকা। বহু প্রতীক্ষার পর বসিরহাট মহকুমার সীমান্ত থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন রুটে চলছে বাস।  হাসনাবাদ থেকে স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চললেও তাতে উঠতে পারেনি কলকাতার বুকে কাজ করতে যাওয়া বহু নিত‍্যযাত্রী। কিন্তু বাস চলতেই বহু ‘দিন আনি, দিন খাই’ ব‍্যক্তির মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি। তাদের রোজগারের অর্থে আবার তাদের ঘরে জ্বলবে রান্নার চুলো। কিন্তু রাস্তায় বাস নামতেই ক্ষতির মুখে বাস মালিকরা। যেখানে ডিজেলের দাম সেঞ্চুরির দিকে, তার উপর ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চালাতে হচ্ছে বাস। করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রী সংখ্যা কম থাকার কারণে বাস চালানোর খরচ উঠবে না। তার ফলে বাস মালিকরা বাসের চালক ও কন্ডাক্টারদের মজুরি দিতেও সমস্যার সম্মুখীন হবে।

বর্তমান ভাড়ার পরিকাঠামো অনুযায়ী, বসিরহাট থেকে বেড়াচাঁপার ভাড়া ২৫ টাকা, বারাসত পর্যন্ত ৪০ টাকা ও ধর্মতলা পর্যন্ত ৬০ টাকা। ইতিমধ্যে বাস মালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। তা না হলে যে অল্প সংখ্যক বাস চলছে তাও হয়তো বন্ধ করে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বাস মালিক সংগঠনের কর্তারা। তার ফলে আবার দৈনিক স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হতে পারে। প্রতিদিন বসিরহাট থেকে বিভিন্ন রুটের বাস যাত্রী নিয়ে ছুটে চলে কলকাতা অভিমুখে। বসিরহাট বোটঘাট থেকে ধর্মতলার রুট ২৫৩,  বসিরহাট থেকে মালঞ্চ ডি এন ৩৮, বসিরহাট থেকে বনগাঁ ডিএন ১২, ধামাখালি থেকে সল্টলেক বহু রুটের বাস চলে।

যদি এই কারণে বন্ধ হয়ে যায় তবে বাস মালিক, শ্রমিকদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কলকাতার বুকে কাজ করতে যাওয়া বহু মানুষও। তাই বাস মালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে অবিলম্বে রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

অন্যদিকে সুন্দরবনের নদীপথে পরিবহন বা পারাপারের অন্যতম মাধ্যম ফেরি পরিষেবাও স্বাভাবিক হলো  এদিন। সন্দেশখালির  ধামাখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, লেবুখালী, মিনাখাঁ, হাড়োয়ার বিদ্যাধরী,  ডাসা, স্বরূপনগরের ইছামতি নদীর ঘাটে যাত্রীরা ফের ভিড় জমাতে শুরু করল।

বৃহস্পতিবার ১ জুলাই লকডাউনের নতুন নিয়ম চালু হতে সকাল হতে চালু হল ফেরি পরিষেবা। ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে নৌকায় যাত্রা শুরু করল দু’মাস পরে নৌকায় উঠতে পেরে সুন্দরবনের  মানুষ দীর্ঘস্বাস ফেলল।

একদিকে রায়মঙ্গল, বেতনি, ছোট কলাগাছি, ইছামতি, সহ বিভিন্ন নদীতে সকাল থেকে যন্ত্র চালিত নৌকা বা ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। সেই ছবি দেখা গেল এদিন বসিরহাট এলাকার সব নদী ঘাটে। কর্মক্ষেত্র ছাড়াও নিত্তনৈমিত্তিক বাজার ঘাট, অফিস কাচারি ও শহরের  সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম লঞ্চ ফেরি চালু হওয়ায়  খুশি সুন্দরবনবাসি। নতুন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে রুটিরুজির সন্ধানে পাড়ি দিতে তাই ভোর থেকে বিভিন্ন নদীর ঘাটে যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। তবে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধিতে মোটর চালিত খেয়া বা লঞ্চ মালিকদের কতটা লাভের মুখ দেখতে পাবে সে নিয়ে তাদের মধ্যেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

অচলাবস্থা কাটিয়ে সচল গণপরিবহণ , যাত্রী পারাপারে চলল ফেরি, বিপাকে বেসরকারি বাস পরিষেবা

আপডেট : ১ জুলাই ২০২১, বৃহস্পতিবার

ইনামুল হক, বসিরহাটঃ অবশেষে কিছুটা হলেও স্বস্তির হাওয়া যাত্রী সাধারণের মধ্যে। রাজ্যের অন্যান্য এলাকার সঙ্গে  পরিবহন পরিষেবা চালু হল সুন্দরবন এলাকাতেও। দীর্ঘ দুই মাসের কার্যত লকডাউনে রাস্তায় চলেনি বাস। বন্ধ ছিল ফেরি চলাচলও। মুখ‍্মন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী ১ জুলাই রাস্তায় ফের গড়াল বাসের চাকা। বহু প্রতীক্ষার পর বসিরহাট মহকুমার সীমান্ত থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন রুটে চলছে বাস।  হাসনাবাদ থেকে স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চললেও তাতে উঠতে পারেনি কলকাতার বুকে কাজ করতে যাওয়া বহু নিত‍্যযাত্রী। কিন্তু বাস চলতেই বহু ‘দিন আনি, দিন খাই’ ব‍্যক্তির মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি। তাদের রোজগারের অর্থে আবার তাদের ঘরে জ্বলবে রান্নার চুলো। কিন্তু রাস্তায় বাস নামতেই ক্ষতির মুখে বাস মালিকরা। যেখানে ডিজেলের দাম সেঞ্চুরির দিকে, তার উপর ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চালাতে হচ্ছে বাস। করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রী সংখ্যা কম থাকার কারণে বাস চালানোর খরচ উঠবে না। তার ফলে বাস মালিকরা বাসের চালক ও কন্ডাক্টারদের মজুরি দিতেও সমস্যার সম্মুখীন হবে।

বর্তমান ভাড়ার পরিকাঠামো অনুযায়ী, বসিরহাট থেকে বেড়াচাঁপার ভাড়া ২৫ টাকা, বারাসত পর্যন্ত ৪০ টাকা ও ধর্মতলা পর্যন্ত ৬০ টাকা। ইতিমধ্যে বাস মালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। তা না হলে যে অল্প সংখ্যক বাস চলছে তাও হয়তো বন্ধ করে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বাস মালিক সংগঠনের কর্তারা। তার ফলে আবার দৈনিক স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হতে পারে। প্রতিদিন বসিরহাট থেকে বিভিন্ন রুটের বাস যাত্রী নিয়ে ছুটে চলে কলকাতা অভিমুখে। বসিরহাট বোটঘাট থেকে ধর্মতলার রুট ২৫৩,  বসিরহাট থেকে মালঞ্চ ডি এন ৩৮, বসিরহাট থেকে বনগাঁ ডিএন ১২, ধামাখালি থেকে সল্টলেক বহু রুটের বাস চলে।

যদি এই কারণে বন্ধ হয়ে যায় তবে বাস মালিক, শ্রমিকদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কলকাতার বুকে কাজ করতে যাওয়া বহু মানুষও। তাই বাস মালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে অবিলম্বে রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

অন্যদিকে সুন্দরবনের নদীপথে পরিবহন বা পারাপারের অন্যতম মাধ্যম ফেরি পরিষেবাও স্বাভাবিক হলো  এদিন। সন্দেশখালির  ধামাখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, লেবুখালী, মিনাখাঁ, হাড়োয়ার বিদ্যাধরী,  ডাসা, স্বরূপনগরের ইছামতি নদীর ঘাটে যাত্রীরা ফের ভিড় জমাতে শুরু করল।

বৃহস্পতিবার ১ জুলাই লকডাউনের নতুন নিয়ম চালু হতে সকাল হতে চালু হল ফেরি পরিষেবা। ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে নৌকায় যাত্রা শুরু করল দু’মাস পরে নৌকায় উঠতে পেরে সুন্দরবনের  মানুষ দীর্ঘস্বাস ফেলল।

একদিকে রায়মঙ্গল, বেতনি, ছোট কলাগাছি, ইছামতি, সহ বিভিন্ন নদীতে সকাল থেকে যন্ত্র চালিত নৌকা বা ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। সেই ছবি দেখা গেল এদিন বসিরহাট এলাকার সব নদী ঘাটে। কর্মক্ষেত্র ছাড়াও নিত্তনৈমিত্তিক বাজার ঘাট, অফিস কাচারি ও শহরের  সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম লঞ্চ ফেরি চালু হওয়ায়  খুশি সুন্দরবনবাসি। নতুন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে রুটিরুজির সন্ধানে পাড়ি দিতে তাই ভোর থেকে বিভিন্ন নদীর ঘাটে যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। তবে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধিতে মোটর চালিত খেয়া বা লঞ্চ মালিকদের কতটা লাভের মুখ দেখতে পাবে সে নিয়ে তাদের মধ্যেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।