১৯ মার্চ ২০২৫, বুধবার, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গণতন্ত্রে সংখ্যালঘুর সুরক্ষার কথা স্মরণ করাল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট

Sumana Puber Kalom
  • আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২১, রবিবার
  • / 1

নৈনিতাল, ১৭ জুলাই : হরিদ্বারে ব্ল্যাঙ্কেট মাংস নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দায়ের করেছিলেন মাঙ্গলৌর এক বাসিন্দা। এই মামলার শুনানির সময় উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ জানিয়েছে যে, গণতন্ত্র শুধুমাত্র সংখ্যাগুরুর আইন নয়, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ারও আইন। এই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি আর এস চৌহান ও বিচারপতি অলোক কুমার বর্মা। হরিদ্বারকে ‘কসাইখানা-মুক্ত’ করার সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরাখণ্ড সরকার। সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পিটিশন জমা পড়েছিল। পিটিশনকারীর দাবি, মার্চ মাসে নেওয়া সরকারের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক। পাশাপাশি অভিযোগ তোলা হয়, ওই নির্দেশ ব্যক্তি পরিসরের অধিকার, জীবনের অধিকার ও বাধাহীনভাবে ধর্মাচরণ করার অধিকারের বিরোধী। এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘খেয়ালি’ও বলা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ মিউনিসিপ্যালিটি আইন লাগু করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। এই আইনের বলে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন, কাউন্সিল বা নগর পঞ্চায়েতের মধ্যস্থিত কোনও এলাকাকে ‘কসাই-মুক্ত’ এলাকা হিসাবে ঘোষণা করার ক্ষমতা নিজেকে দিয়েছে সরকার।

এই মামলার প্রতিক্রিয়ায় অ্যাডভোকেট জেনারেল এস এন বাবুলকর নিষিদ্ধকরণের সমর্থনে পেশ হওয়া বহু রায়ের কথা উল্লেখ করেন। ভারতীয় সংবিধানের ৪৮ ধারার দিকে বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করানোর চেষ্টাও করেন তিনি। শুনানির সময় বেঞ্চ জানায় যে, ধর্মীয় দিকে না গিয়ে ওই নির্দেশের সাংবিধানিকতা বিবেচনা করে দেখবে আদালত। এরই সঙ্গে বেঞ্চ বলে, সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হয় তার ভিত্তিতে সভ্যতার মূল্যায়ন হয়। হরিদ্বারের এই নিষেধাজ্ঞা মানুষের ইচ্ছাকে রাষ্ট্র কতখানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। এই পিটিশনের প্রেক্ষিতে সাংবিধানিক ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে বলে ঘোষণা করেছে বেঞ্চ এবং এই পিটিশন ‘গুরুতর মৌলিক প্রশ্নকে’ তুলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে। একই সমস্যা নিয়ে এর আগে দেশের শীর্ষ আদালতও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, প্রশ্ন হল, নিজের খাদ্যাভাস ঠিক করার অধিকার একজন নাগরিকের রয়েছে নাকি তা রাষ্ট্র ঠিক করে দেবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৩ জুলাই।

Tag :

রিপোর্টার

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

গণতন্ত্রে সংখ্যালঘুর সুরক্ষার কথা স্মরণ করাল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট

আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২১, রবিবার

নৈনিতাল, ১৭ জুলাই : হরিদ্বারে ব্ল্যাঙ্কেট মাংস নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দায়ের করেছিলেন মাঙ্গলৌর এক বাসিন্দা। এই মামলার শুনানির সময় উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ জানিয়েছে যে, গণতন্ত্র শুধুমাত্র সংখ্যাগুরুর আইন নয়, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ারও আইন। এই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি আর এস চৌহান ও বিচারপতি অলোক কুমার বর্মা। হরিদ্বারকে ‘কসাইখানা-মুক্ত’ করার সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরাখণ্ড সরকার। সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পিটিশন জমা পড়েছিল। পিটিশনকারীর দাবি, মার্চ মাসে নেওয়া সরকারের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক। পাশাপাশি অভিযোগ তোলা হয়, ওই নির্দেশ ব্যক্তি পরিসরের অধিকার, জীবনের অধিকার ও বাধাহীনভাবে ধর্মাচরণ করার অধিকারের বিরোধী। এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘খেয়ালি’ও বলা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ মিউনিসিপ্যালিটি আইন লাগু করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। এই আইনের বলে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন, কাউন্সিল বা নগর পঞ্চায়েতের মধ্যস্থিত কোনও এলাকাকে ‘কসাই-মুক্ত’ এলাকা হিসাবে ঘোষণা করার ক্ষমতা নিজেকে দিয়েছে সরকার।

এই মামলার প্রতিক্রিয়ায় অ্যাডভোকেট জেনারেল এস এন বাবুলকর নিষিদ্ধকরণের সমর্থনে পেশ হওয়া বহু রায়ের কথা উল্লেখ করেন। ভারতীয় সংবিধানের ৪৮ ধারার দিকে বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করানোর চেষ্টাও করেন তিনি। শুনানির সময় বেঞ্চ জানায় যে, ধর্মীয় দিকে না গিয়ে ওই নির্দেশের সাংবিধানিকতা বিবেচনা করে দেখবে আদালত। এরই সঙ্গে বেঞ্চ বলে, সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হয় তার ভিত্তিতে সভ্যতার মূল্যায়ন হয়। হরিদ্বারের এই নিষেধাজ্ঞা মানুষের ইচ্ছাকে রাষ্ট্র কতখানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। এই পিটিশনের প্রেক্ষিতে সাংবিধানিক ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে বলে ঘোষণা করেছে বেঞ্চ এবং এই পিটিশন ‘গুরুতর মৌলিক প্রশ্নকে’ তুলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে। একই সমস্যা নিয়ে এর আগে দেশের শীর্ষ আদালতও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, প্রশ্ন হল, নিজের খাদ্যাভাস ঠিক করার অধিকার একজন নাগরিকের রয়েছে নাকি তা রাষ্ট্র ঠিক করে দেবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৩ জুলাই।